করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫ লাখ মৎস্য ও পোল্ট্রি খামারিরা পেলেন আর্থিক প্রণোদনা
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের আর্থিক প্রণোদনা প্রদান অনুষ্ঠানে উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৪ লক্ষ ৮৫ হাজার ৪৭৬ জন খামারিকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ৫৬৮.৮৬ কোটি টাকা নগদ আর্থিক প্রণোদনা দিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে প্রাণিসম্পদ খাতে ক্ষতিগ্রস্ত খামারির সংখ্যা ৪ লক্ষ ৭ হাজার ৪০২ জন ও মৎস্য চাষীর সংখ্যা ৭৮ হাজার ৭৪ জন।
অনুষ্ঠানে খামারিদের নগদ, বিকাশ ও ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে প্রণোদনার অর্থ পৌঁছে দেওয়া হয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে প্রণোদনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, বিশেষ ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু ও বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিজ্ মার্চি মিয়াং টেম্বন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ।
এ সময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ ও দারিদ্র্যবিমোচনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের ভূমিকা অপরিসীম। সরকার এ খাতের খামারি ও উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, সরকার মাছ, দুধ, ডিম, মাংস, ফলমূলসহ অন্যান্য পুষ্টিজাতীয় খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিচ্ছে। এগুলোর উৎপাদন বাড়িয়ে পুষ্টির চাহিদা পূরণ, প্রান্তিক মানুষের দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আয় বড়ানো সম্ভব। এক্ষেত্রে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমাদের দেশের মূল শক্তি জনগণের পরিশ্রম। তাদের উঠে দাঁড়াবার ক্ষমতা বারবার পরীক্ষিত। করোনার মধ্যেও আমরা প্রায় সাড়ে পাঁচ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি।
সভাপতির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলা করে দেশের মানুষকে ভালো রাখতে শেখ হাসিনা অবিরাম পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তার নির্দেশনায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় পাঁচ লক্ষ খামারিকে তাদের নির্ধারিত মোবাইল নম্বরে নগদ প্রণোদনা পৌঁছে দিয়েছি। আরও প্রায় দুই লক্ষ খামারিকে প্রণোদনা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা যাচাই-বাছাই করছি, যাতে মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা প্রণোদনা সহায়তা নষ্ট করতে না পারে।
অনুষ্ঠানে পিরোজপুর, টাঙ্গাইল, সুনামগঞ্জ, বরগুনা, পটুয়াখালী ও সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট জেলার উপকারভোগী খামারিরা ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ‘প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন’ এবং মৎস্য অধিদপ্তরের ‘সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ’ প্রকল্প দুটির আওতায় প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দেশের ৪৬৬টি উপজেলা থেকে যাচাই করা প্রাণিসম্পদ খাতের ৪ লক্ষ ৭ হাজার ৪০২ জন খামারিকে ১৫টি ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন হারে ৪৬৮ কোটি ৮৬ লক্ষ ৪১ হাজার ২৫০ টাকা এবং ৭৫টি উপজেলা থেকে যাচাই করা মৎস্য খাতের ৭৮ হাজার ৭৪ জন খামারিকে ৭টি ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন হারে ১০০ কোটি টাকা প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।