1. admin@dainiktrinamoolsangbad.com : admin :
সোমবার, ০৫ জুন ২০২৩, ০৬:৩৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পাথরঘাটায় পরিত্যক্ত ভবনে লাইব্রেরী” প্রচন্ড তাপদাহে টিনশেডে শিশুদের ক্লাস! মঠবাড়িয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের “সভাপতি নাজমুল-সম্পাদক কামরুল! হিজলায় প্রতিবন্ধী ও অসহায় পরিবারের মাঝে এফ এ আর গ্রুপের গরু বিতরণ জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৩’ ভান্ডারিয়ায় কলেজ পর্যায় শ্রেষ্ঠ শ্রেণী শিক্ষক “নুরুজ্জামান হাওলাদার ঘূর্ণিঝড়ে জন্ম নিয়েছে শিশু” মা’ নাম রেখেছে মোখা! ভান্ডারিয়ায় শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোটের কমিটি গঠন, সভাপতি মনির-সম্পাদক পলাশ! পিরোজপুর জেলা জাতীয় যুব সংহতির”  হাফিজুর রহমান আহবায়ক ও আবুল কালাম সদস্য সচিব। মঠবাড়িয়ায় মানবসেবা সংগঠনের পক্ষ থেকে অসুস্থ ছাত্রীকে “আর্থিক সহায়তা। র‌্যাবের অভিযানে “মঠবাড়িয়া পুলিশের উপর হামলার ৫ আসামি গ্রেপ্তার। আত্ম কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ভান্ডারিয়ায় যুব মহিলাদের প্রশিক্ষণ।

মানব সেবক-করোনা যোদ্ধা ডা: সুদীপ কুমার হালদারের ফেসবুকে আবেগপূর্ণ স্ট্যাটাস

এইচ এম জুয়েল
  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
  • ৩১৩ বার পঠিত

মানব সেবক করোনা যোদ্ধা

 ডা: সুদীপ কুমার হালদারের

 ফেসবুকে আবেগপূর্ণ স্ট্যাটাস

 

 এইচ এম জুয়েল:- ভালো যারে বেসেছি সেতো আপন নয়, তবুও ভালোবেসে যাবো বিধাতা সহায়।              ফিরে দেখে বারেবার নয়ন দুটি অবিরাম,                আমার জীবন সঁপে দেব তোমাদের পান।

 বরগুনায় বদলী, অসহায়ত্ব এবং বোবা কান্না ..তারপরও পেশা যার চিকিৎসা  নেশা যার মানবতা যেতে হবেই।

আমার মা আমাকে গর্ভে ধারন করেছেন আর শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ আমাকে গর্ভে ধারন না করলেও …ধারন করেছেন আর আমিও ধারন করি মাতৃতুল্য আমার মেডিকেল কে …. আমার ধ্যান জ্ঞান … প্রতিমূহুর্তের ভাবনা আমার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল । এর অসহায়ত্ব .. এর ভগ্নদশা আমাকে প্রতিমূহুর্তে কুড়ে কুঁরে খায়।

দক্ষিনবাংলার মানুষের চিকিৎসার শেষ আশ্রয়স্হল এই মেডিকেলের উন্নয়নে সর্বদা চেষ্টা করেছি ।করোনা মহামারির ভয়াল দিনগুলোতে সবাই যখন ঘরবন্দী,যে যার জীবন বাঁচাতে মরিয়া …সেই ভয়াল দিনগুলোতে..নিজের জীবনের পরোয়া না করে ,পরিবারের সবার জীবনের ভয়াবহতাকে উপেক্ষা করে।

শ্রদ্ধেয় পরিচালক ডা: মো বাকির হোসেন স্যারের নেতৃত্বে আমার আরও কয়েকজন সহকর্মীদের নিয়ে ঝাপিয়ে পরেছিলাম মানবতার যুদ্ধে …মাননীয় প্রধানমন্ত্রী র চলো যাই যুদ্ধে করোনার বিরুদ্ধে ডাকে সাড়া দিয়ে .. সব ছেড়ে সারাদিন রাত কাজ করেছি .. শত অপ্রতুলতা র মাঝেও …সর্বোচ্চ টুকু দেয়ার চেষ্টা করেছি …না। এজন্য প্রনোদনা নামক প্রহসনে ১ টাকা কিংবা কোন সম্মাননা আমি পাইনি

সারাদেশে যখন PPE সংকট .. সবার কাছে গিয়ে গিয়ে আমরা টাকা তুলে … ঢাকায় .. আমাদের ছোটভাই Dr Nilanjon এর সহায়তায় … PPE এনে সকল স্বাস্হ্যকর্মীদের দিয়েছি।

সমাজের সকল মানুষের কাছে সহায়তা চেয়েছি এগিয়ে এসেছিলেন … সাংবাদিক ভাইয়েরা

তাদের সহায়তায় এসেছিল প্রচুর মাস্ক , Hand Glove সমাজের বিত্তবানদের কাছে হাত পেতে ..এনেছিলাম … তখনকার সোনার হরিন …হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, The daily star এর সুশান্ত দাদা, সময় সংবাদের সোহাগ ভাই , The Independent এর মুরাদ ভাই  DBC news এর মি অপূর্ব দা ..সবার সার্বিক সহযোগিতা য় … তাদের প্রচারে বিত্তবান রা সবাই এগিয়ে এসেছিলেন OXYGEN CYLINDER পেলাম অনেক।

পরিচালক স্যারের নির্দেশে … ডা সৌরভ , ডা তুহিন , ডা আশিক ,ডা ফাইয়াজ ডা তন্বী … আমরা প্রায় প্রতিদিন পালা করে করোনা ওয়ার্ডে যেতাম …সরকারি নির্দেশনায় চালু করেছিলাম TRIAGE CORNER … করোনার সাথে সাথে …সাধারন কোন রুগী যাতে বিনা চিকিৎসায় ফেরত না যায় … সেজন্য বানিয়েছিলাম … EMERGENCY ROOM এর পাশে …ONE STOP SERVICE CORNER …মাননীয় মেয়র মহোদয় আমাদেরকে দিয়েছিলেন খাদ্যসহায়তা এবং যাতায়াতের জন্য গাড়ী …নিজেরা টাকা উঠিয়ে অসহায় রুগীদের যাওয়ার সময় চাল ডাল ও যাওয়ার ভাড়া দেয়ার ব্যবস্হা করেছিলাম … শ্রদ্ধেয় শাহীন স্যার , রানা স্যার এর মাধ্যমে আমাদের মেডিকেল এর ভাইদের কাছ থেকে বিদেশ থেকে আনা হয়েছিল N95 Mask।

বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জায়গা থেকে চিকিৎসক এনে .. চেষ্টা করেছি সব সামাল দিতে …তখনকার দিনের বেতনের টাকা … বরিশাল সহ আমার নিজ এলাকার গরীব মানুষদের .. নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষ সহ নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছি।

পরিচালক স্যার এর নির্দেশে , শ্রদ্ধেয় ডা. হাওয়া ম্যাম এর সাহায্যে চালু করেছিলাম  করোনা আক্রান্ত মায়েদের সিজার এর জন্য আলাদা অপারেশন থিয়েটার … BMA এর সহায়তায় চালু হয়েছিল … বাসায় বাসায় গিয়ে sample collection…মূহুর্তে র জন্যও নিজের বা পরিবারের ঝুকির কথা মাথায় আসেনি কখনও ….করোনা শেষে শুরু করলাম মেডিকেলের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে নানা ফোরামে কথা বলা।

আমার নিজ ওয়ার্ড অর্থোপেডিক্স …মেডিকেলের মধ্যে সবথেকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন …কোন ওষুধ রুগীকে বাইরে থেকে কিনতে হয় না …গত তিন বছরে আমি নিজে অপারেশন করেছি প্রায় ২০০ এর মত … তাছাড়া টোটাল ওয়ার্ডে প্রায় ১০০০ খানেক অপারেশন হয়েছে

ORTHOPAEDICS WARD কে Prof Dr Sahin sir এর নির্দেশনায় ও প্রত্যক্ষ সহায়তায় একটা পরিবারের মত গড়ে তুলেছি … যেখানে ডাক্তার, নার্স সহ সকল স্বাস্হ্যকর্মী নিজেদের ভালবাসা দিয়ে রুগীদের সেবা করেন ।বর্তমান ডাইনামিক পরিচালক ডা: সাইফুল ইসলাম স্যার আসার পর … outdoor ..indoor কোথাও রুগীকে ওষুধ কিনতে হয় না …চালু হয়েছে নতুন cardiac , urology, vascular outdoor service …চেষ্টা করেছি হাসপাতালের নেমপ্লেট টা পরিবর্তন করতে অনেক ফোরামে কথা বলেছি …..যাতে MRI , CT SCAN , C ARM মেশিন চালু করা যায় … Burn and plastic surgery ward চালু করার জন্য …মিডিয়ার সাহায্যে বিভিন্ন সময় চেষ্টা করেছি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী র ভিশন … স্বাস্হ্যসেবা জনগনের দোড়গোরায় পৌঁছে দেবার প্রত্যয়ে আমাদের সবার অভিভাবক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ স্যারের বাসায় তৎকালীন পরিচালক ডা সিরাজ স্যারের সাথে গিয়ে পরামর্শ ও সহায়তা নিয়েছি অনেকবার ….সর্বশেষ চিকিৎসক সংকটের বড় কারন উচ্চতর ডিগ্রীর কোর্স চালুর জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্যারদের কাছে গিয়েছি। বলেছি …. আমার ক্ষমতা খুবই সীমিত .. নাই বললেই চলে …তবে মনপ্রাণ উজাড় করে দিয়ে ভালবেসেছি আমার প্রানের মেডিকেলকেআর দক্ষিন জনপদের চিকিৎসা নিতে আসা মানুগুলোকে।

নিজের এলাকা মঠবাড়িয়ার মানুষদের একটু বেশীই ভালবেসেছি ….জরুরী বিভাগে বলাই ছিল …মঠবাড়িয়ার কোন রুগী এলে আমাকে জানাতে ….দিন আর রাত দেখিনি …. দৌড়ে এসেছি …সবটুকু পারিনি … তবে আন্তরিকতার অভাব ছিল না … দিতে চেয়েছি সর্বোচ্চটুকু।মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইট পাথরকেও ভালবেসে ফেলেছি বড় বেশী

এখানকার সকল চিকিৎসককে নিজের পরিবারের থেকেও বেশী ভালবাসি ….আমার নার্স ভাইবোন … চতুর্থ শ্রেনীর সবার যেকোন সমস্যা কেই মনে হত … আমার ভাইবোনের সমস্যা … হয়ত পারতামনা তবে দৌড়ে যেতাম এবং চেষ্টা করতাম সবার জন্য …আমার রক্তে রক্তে মিশে আছে শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল , এর সকল মানুষগুলো … এবং চিকিৎসা নিতে আসা মানুষগুলো …এত এত স্বল্পতা নিয়েওসীটের তিন থেকে চারগুন রুগীকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে গেছি অর্ধেকেরও কম জনবল দিয়ে ….আর এই ভাবনাগুলোকে বাস্তবে রূপ দেয়ায় …আমার প্রিন্সিপাল স্যার , পরিচালক স্যার , সহকারী। পরিচালক স্যার , আমার সহকর্মী চিকিৎসকবৃন্দ , আমার নার্স ভাইবোন , চতু্র্থশ্রেনীর সকল স্বাস্হ্যকর্মী ভাইবোন যারা সাহায্য করেছেন …..সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা , শ্রদ্ধা ও ভালবাসা । ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সকল ভাইদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ঋনী ।প্রথম আলোর পুলক দা , যুগান্তর এর শাহীন ভাই ,ভোরের আলোর মিরন ভাই …. শ্রদ্ধা ও ভালবাসা নিবেন ….মেডিকেল টা নিয়ে আপনাদের ভাবনা সত্যিই আমাকে অনুপ্রানিত করত …..মুগ্ধ হতাম আপনাদের কর্মকান্ডে।

চাকরীর খাতিরে ..সরকারি আদেশে আমি বরগুনা সদর হাসপাতালে বদলী হয়েছি ….খুব কঠিন সময়ে যেতে হচ্ছে …..আমার স্ত্রী ডা: স্নিগ্ধা চক্রবর্তী বরিশালের মানুষের কথা ভেবেই জরায়ু ক্যান্সারের উপর উচ্চতর ডিগ্রী নিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত …..বরিশাল বাসায় ছোট দুইটা ছেলেমেয়ে …বৃদ্ধ বাবা মা … কিভাবে কি যে করব , সব কেমন যেন এলোমেলো লাগতেছে ….. তারপরও পেশা যার চিকিৎসা  নেশা যার মানবতা যেতে হবেই ।

আমাকে সাহস যুগিয়েছে , ভালবাসা দিয়েছে নাম উল্লেখ করতে পারিনি অনেকেই আছেন , ডা: ওয়াহিদ ভাই …. সবাই আমার জন্য দোয়া ও আশীর্বাদ করবেন …. কখনও অনিচ্ছাকৃত কোন ভুল করে থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী ।ভাল থাকুক প্রানের মেডিকেল … মেডিকেলের সব মানুষগুলো ….. আরও উন্নত হোক এর চিকিৎসার মান।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সমীপে আকুল আবেদন আমরা বরিশালের মানুষ নদী পার হইয়া উন্নত চিকিৎসা নিতে ঢাকা যাইতে পারমু না …..শের ই বাংলা মেডিকেলকেই বিশ্বমানের করে গড়ে তুলে এখানেই আমার দক্ষিন জনপদের মানুষের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্হা করার জন্য মিনতি করছি ।

জয় বাংলা-জয় বংগবন্ধু ।

ডা: সুদীপ কুমার হালদার

কনসালটেন্ট অর্থোপেডিকস সভাপতি ( সাবেক) ইনডোর ডক্টরস এসোসিয়েশন শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ;বরিশাল।

তথ্যটি তার নিজ ফেসবুক টাইমলাইন থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি সংগৃহীত

এ জাতীয় আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২০ দৈনিক তৃণমূল সংবাদ
Theme Customized BY Theme Park BD