তৃণমূল ডেক্স:- অশালীন ভাষা ও নারী কেলেঙ্কারি ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর কথা বলে মন্ত্রিত্ব হারানোর পর দলীয় পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে সুপারিশ করছে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ। এই প্রেক্ষাপটে দলের প্রাথমিক সদস্য পদও হারালে মুরাদ হাসান সংসদ সদস্য থাকতে পারবেন কি না, সে প্রশ্ন এখন সামনে এসেছে। তিনি বিভিন্ন সময়ে ধর্মবিরোধী ও দলীয় মুখপাত্র সেজে সমালোচিত হয়েছেন।
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়ে কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তিনি যদি ওই দল থেকে পদত্যাগ করেন অথবা সংসদে ওই দলের বিপক্ষে ভোট দেন, তাহলে সংসদে তাঁর আসন শূন্য হবে। কিন্তু দল যদি কাউকে বহিষ্কার করে সে ক্ষেত্রে কী হবে, সংবিধানে তার উল্লেখ নেই।
তবে সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুসারে কোন সংসদ-সদস্যের আসন শূন্য হইবে কিনা, সে সম্পর্কে কোন বিতর্ক দেখা দিলে শুনানী ও নিষ্পত্তির জন্য প্রশ্নটি নির্বাচন কমিশনের নিকট প্রেরিত হইবে এবং অনুরূপ ক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।
অবশ্য মুরাদ হাসান এখনো দল থেকে পদত্যাগ করেননি। দলের প্রাথমিক সদস্যপদও এখনো হারাননি। তিনি ছিলেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক। জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভায় আজ তাঁকে এই পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কাছে সুপারিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁর প্রাথমিক সদস্যপদ থাকবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মুরাদ হাসানকে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর ভাগ্যই বরণ করতে হতে পারে।
এর আগে দশম সংসদে ২০১৪-২০১৫ সালে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বিতর্কিত মন্তব্য করে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন সাবেক সাংসদ আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। তাঁর প্রাথমিক সদস্যপদও বাতিল করেছিল আওয়ামী লীগ।
শেষ পর্যন্ত ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে গিয়ে নিজেই সাংসদ পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন লতিফ সিদ্দিকী। ২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর লতিফ সিদ্দিকীর আসনটি শূন্য হওয়ার বিষয়টি সংসদকে অবহিত করেন স্পিকার।
ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর শাহবাগ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন জুলিয়াস সিজার তালুকদার নামে এক ঢাবি শিক্ষার্থী।
ঢাবির সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের শিক্ষার্থী সিজার অভিযোগে বলেন,
সম্প্রতি ঢাবির রোকেয়া হল এবং শামসুন্নাহার হলের নারী শিক্ষার্থীদের চরিত্র হননের অপচেষ্টা করে মুরাদ হাসান বলেন, ‘তারা রাতে নিজেদের হলে অবস্থান না করে বিভিন্ন পাঁচ তারকা হোটেলে গিয়ে রাত্রিযাপন করে।’এই বাক্য দিয়ে তিনি (মুরাদ হাসান) ঢাবির নারী শিক্ষার্থীদেরকে চরিত্র হননের অপচেষ্টা করেছেন।
তিনি আরো বলেছেন ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রস্রাব করার সময়ও আমার নাই’। এতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে দেশের সর্বপ্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠকে তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাচ্ছিল্য করেছেন।