1. admin@dainiktrinamoolsangbad.com : admin :
শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ১১:৩২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পাথরঘাটায় পরিত্যক্ত ভবনে লাইব্রেরী” প্রচন্ড তাপদাহে টিনশেডে শিশুদের ক্লাস! মঠবাড়িয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের “সভাপতি নাজমুল-সম্পাদক কামরুল! হিজলায় প্রতিবন্ধী ও অসহায় পরিবারের মাঝে এফ এ আর গ্রুপের গরু বিতরণ জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৩’ ভান্ডারিয়ায় কলেজ পর্যায় শ্রেষ্ঠ শ্রেণী শিক্ষক “নুরুজ্জামান হাওলাদার ঘূর্ণিঝড়ে জন্ম নিয়েছে শিশু” মা’ নাম রেখেছে মোখা! ভান্ডারিয়ায় শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোটের কমিটি গঠন, সভাপতি মনির-সম্পাদক পলাশ! পিরোজপুর জেলা জাতীয় যুব সংহতির”  হাফিজুর রহমান আহবায়ক ও আবুল কালাম সদস্য সচিব। মঠবাড়িয়ায় মানবসেবা সংগঠনের পক্ষ থেকে অসুস্থ ছাত্রীকে “আর্থিক সহায়তা। র‌্যাবের অভিযানে “মঠবাড়িয়া পুলিশের উপর হামলার ৫ আসামি গ্রেপ্তার। আত্ম কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ভান্ডারিয়ায় যুব মহিলাদের প্রশিক্ষণ।

সুন্দারবনে বাঘের মুখ থেকে ক্ষত-বিক্ষত জেলের দেহবশেষ উদ্ধার 

এইচ এম জুয়েল
  • আপডেট সময় : বুধবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ৫৬৭ বার পঠিত

সুন্দারবনে বাঘের মুখ থেকে

ক্ষত-বিক্ষত জেলের দেহবশেষ উদ্ধার

 

এইচ এম জুয়েল:– বাঘের আক্রমণে ক্ষত-বিক্ষত জেলের মরদেহ ১২ ঘণ্টার পর উদ্ধার।মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে বনবিভাগ ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে পায়রাটুলী খাল সংলগ্ন  সুন্দরবন গহীন জঙ্গল থেকে বাঘের হামলায় নিহত জেলে মজিবর গাজীর ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ ১২ ঘণ্টা অভিযান শেষে উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।

তবে যার নাম না বললেই নয় তিনি হলো সুন্দরবন সংলগ্ন এক পরোপকারী মানুষ “টাইগার গনি” যিনি বাঘের মুখ থেকে ছিনিয়ে  কাঁধে করে গহীন সুন্দরবন থেকে মজিবর গাজীর লাশটি কাঁধে করে নিয়ে আসেন।এবং জেলেদের বিভিন্ন বিপদে ঝাপিয়ে পড়েন এই সাহসী মানুষটি।

এর আগে, সোমবার বিকেল ৪টার দিকে সুন্দরবনে পায়রাটুলি খালে কাঁকড়া ধরার সময় বাঘের আক্রমণে মুজিবর গাজী নিহত হন। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এম এ হাসান বলেন, ঘটনা জানার পর সোমবার সন্ধ্যা থেকে উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে অভিযান শুরু করে। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে সুন্দরবনের ভেতর থেকে মুজিবর গাজীর ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার বিকেলে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।তিনি আরও বলেন নতুন বন আইন অনুযায়ী নিহতদের পরিবার ৩ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাবে।

এক জরিপে জানাযায় সুন্দরবনে বাঘের আক্রমণে গত ২ বছরে ৩০ মৎস্যজীবী ও মৌয়ালের মৃত্যু হয়েছে। এরপরও জীবিকার তাগিদে সুন্দরবনে ছুটে গেছেন বহু মৎস্যজীবী ও মৌয়াল। সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীর খাঁড়িতে প্রচুর কাঁকড়া ও সামুদ্রিক মাছ এবং গাছে বিভিন্ন প্রজাতি  ফুলের মধু পাওয়া যায়।এগুলির ব্যাপক চাহিদা থাকায় অর্থনৈতিকভাবে লাভবানের আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জীবিকার তাগিদে বারবার ছুটে যান।কর্মস্থান সুন্দরবনের।

এদিকে (অবিভক্ত সুন্দারবন) বাংলাদেশ ও ভারতে মধ্যে বয়ে যাওয়া সুন্দারবনে বাঘের আক্রমণে স্বামী মারা যাওয়া বিধবা স্ত্রী দের বলা হয় (ব্যাঘ্র বিধবা)  এই মহিলাদের একেবারে সঠিক সংখ্যা জানা না গেলেও স্থানীয় মানুষজন ও বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন এবং অন্যান্য সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য জানা যায় গত তিন দশকে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩,০০০-অর্থাৎ প্রতিবছর গড়ে ১০০ জনের মত। ‘ব্যাঘ্র বিধবা”হন।

তবে এদের জীবন কুসংস্কারের একটি প্রতিচ্ছবি। সুন্দরবনের নদীতে মাছ ধরতে অথবা মধু আহরণে গিয়ে বাঘের আক্রমণে স্বামী নিহত হলে।স্ত্রী (ব্যাঘ্র বিধবা )দের সইতে  হয় নানা বঞ্চনা। অপয়া’ ‘অলক্ষ্মী’ ‘স্বামীখেকো’এরকম কুরুচি সম্পন্ন  অপবাদ মাথায় নিয়েই চলতে হয় সংগ্রামী  জীবন। বিয়ে-জীবন-মৃত্যু সৃষ্টিকর্তার হাতে। অথচ এ জন্য দায়ী করা হয় অসহায়-অবলা নিষ্পাপ স্ত্রীকে।এই আধুনিক যুগেও বাঘের আক্রমণে নিহত ব্যক্তিদের স্ত্রীদের এমনই পরিণতি বরণ করতে হচ্ছে সুন্দরবনের আশপাশের এলাকাগুলোতে।

পর্যটকদের উপর বাঘের আক্রমণের দৃশ্য

২০১২ বন আইনে এদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে অর্থ দেওয়া হয়।

বন বিভাগের তথ্য মতে, ২০১৭-১৮ সালে বন অধিদপ্তর কর্তৃক ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতির মাধ্যমে পরিচালিত বাঘ জরিপে সুন্দরবনে ১১৪টি বাঘের সন্ধান পাওয়া যায়। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য মতে, বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রকৃতিতে বিদ্যমান বন্য বাঘের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার ৯০০টি। এই সুন্দরবন বনভূমিটি, স্বনামে বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার ছাড়াও নানান ধরনের পাখি, চিত্রা হরিণকুমির, বানর ও সাপসহ অসংখ্য প্রজাতির পাখি আর প্রাণীদের আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত। জরিপ মোতাবেক ১১৪টি বাঘ ও ১০০০০০ থেকে ১৫০০০০ চিত্রা হরিণ রয়েছে এখন সুন্দরবন এলাকায়।

বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ দশটি অধ্যায় এবং ৫৪টি ধারায় বিভক্ত। আইনের ৩৬ ও ৩৭ ধারায় বাঘ, হাতি, চিতাবাঘ, হরিণ ইত্যাদি নিধন করলে আইনের ৩৬ ধারায় দণ্ড- সর্বনিম্ন ২ বছর, সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদণ্ড ও সর্বনিম্ন ১ লাখ, সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটালে সর্বোচ্চ ১২ বছর কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।

সুন্দরবন হলো বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রশস্ত বনভূমি যা বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়াবলির অন্যতম। পদ্মামেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীত্রয়ের অববাহিকার বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত এই অপরূপ বনভূমি বাংলাদেশের খুলনাসাতক্ষীরাবাগেরহাট, পিরোজপুর, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দুই জেলা উত্তর চব্বিশ পরগনা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জুড়ে বিস্তৃত।

সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে সুন্দরবন বিশ্বের সর্ববৃহৎ অখণ্ড বনভূমি। ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে এবং বাকি অংশ রয়েছে ভারতের মধ্যে।

সুন্দরবন ৬ ডিসেম্বর ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।

এ জাতীয় আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২০ দৈনিক তৃণমূল সংবাদ
Theme Customized BY Theme Park BD