এইচ এম জুয়েল:- জাতীয় পার্টি-জেপি’র চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ক্ষুন্ন হয় এমন কোন আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী তৎপরতা প্রতিহত করার ক্ষেত্রে কোন আপোষ করা হবে না। সংবিধানে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছে বলে রাষ্ট্রে সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু বলতে কোন বিভাজন নেই। ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতাকে ভিত্তি করে ভারত বর্ষ বিভক্ত হয়েছিলো। এই বিভক্তিকে পুঁজি করে উপমহাদেশে বিভিন্ন সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালানো হয়। যা একটি মহল বিশেষের গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি রবিবার (৭নভেম্বার) পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, বাংলাদেশে সম্প্রতি যে কিছু কিছু ঘটনা ঘটেছে এর নেপথ্যেও গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। অতীতে আমাদের দেশে অনুরূপ দু’একটি ঘটনা যখন ঘটেছিল তখন আমরা সরকারে থেকে তা কঠোর হাতে দমনের নির্দেশ দিয়েছিলাম। যেখানে গুলিবর্ষণের মত কঠিন সিদ্ধান্ত দিতেও আমরা দ্বিধা করিনি। দেশের উন্নয়নের প্রয়োজনে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মত যেকোন আত্মঘাতি কার্যকলাপ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, সকলকে বিরত থাকতে হবে। আগে দেখা যেত ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে আত্মকোন্দল, যা অনেক সময় সংঘর্ষেও রূপ নিত। এখন দলে দলে সংঘর্ষ হ্রাস পেলেও দলীয় অভ্যান্তরীণ কোন্দল বা অন্তর্দ্বন্দ্বের ঝোঁক লক্ষ্য করা যায়। আমরা এ অঞ্চলে উন্নয়নের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ আছি। আমি যতদিন বেঁচে আছি/আল্লাহ আমাকে যতদিন বাঁচিয়ে রাখবেন ততদিন এ এলাকায় মানুষের স্বার্থ বিঘ্নকারী কোন ঘটনা ঘটতে দেয়া হবে না। ভাণ্ডারিয়ায় যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চমৎকার পরিবেশ বিরাজমান তা অক্ষুন্ন রাখতে হবে। আল্লাহ ইচ্ছায় আমরা রাজনীতিতে এসেছি, তিনি যতদিন চাইবেন ততদিন মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকবো। কাজের প্রশ্নে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এলাকায় মানুষের মধ্যে ঐক্য থাকলে শান্তি থাকে তথা সেখানে উন্নয়ন কাজও অব্যাহত থাকে।
তিনি আরও বলেন, মানুষের সাথে সদাচরণ বা ভালো ব্যবহার করা উচিত। গত ৩৮ বছরে আমরা এলাকার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলেছি। এ সময় ভাণ্ডারিয়া সহ এ এলাকায় মানুষ পারস্পরিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত, বাদানুবাদ, কলহ-কাইজ্জা মুক্ত থেকে নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নের প্রচেষ্টায় ব্যাপৃত থেকেছে। এই শান্তির ধারা, উন্নয়ন প্রচেষ্টা তথা সহাবস্থানের পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখতে হবে।
ভাণ্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সীমা রানী ধর এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন পিরোজপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহারাজ বলেন আমরা পরস্পরের প্রতি সহনশীল অবস্থা বজায় রাখবো এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকলে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। আরও বক্তব্য দেন ভাণ্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিরাজুল ইসলাম। উপজেলা জাতীয় পাটি-জেপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও পৌর কাউন্সিলর গোলাম সরওয়ার জমাদ্দার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফায়জুর রশীদ খসরু জমাদ্দার, জেপি’র উপজেলা সদস্য সচিব ও ধাওয়া ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান টুলু ।
এসময় মঞ্চে ছিলেন ভাণ্ডারিয় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মৃধা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আসমা আক্তার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুমুর রহমান বিশ্বাস, গৌরীপুর ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান চৌধুরী, ভিটাবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান খান এনামুল করিম পান্না, ইকড়ি ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির, তেলিখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. শামসুদ্দিন, উপজেলা জেপি নেতা ইউসুফ আলী আকন, টুঙ্গীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা হাফিজুর রশীদ তারিক প্রমুখ।
অনুষ্ঠিত এই সাম্প্রদায়িকতা আলোচনা সভায় এলাকার আলেম-ওলামা
হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দসহ জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।