1. admin@dainiktrinamoolsangbad.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:১৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পিরোজপুরের ৩টি আসনে মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাইয়ে ৩৩টির মধ্যে বাদ পড়েছে  ১০টি বরিশাল- ৪ আসনে ‘শাম্মী আহমেদ’ নৌকার মনোনীত হওয়ায় এলাকায় ‘আনন্দ মিছিল। ভাণ্ডারিয়া ভুবনেশ্বর নদ থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার।। জেলা সরকারি চাকুরিজীবী কল্যান পরিষদ নির্বাচনে সামসুদ্দোহা সভাপতি ও সাদ্দাম হোসেন সম্পাদক। হিজলায় ঘূর্ণিঝড় মিধিলি’র তান্ডবে ফসলের ব্যপক ক্ষতি ।। তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে হিজলায় আনন্দ মিছিল।। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে ইন্দুরকানী উপজেলা আওয়ামীলীগের বিশেষ বর্ধিত সভা।। ডিজিটাল নিরাপত্তা মামলায় সীতাকুণ্ডে ছাত্রলীগ নেতা কারাগারে।। সিগারেট কোম্পানির অপতৎপরতা বন্ধে নলছিটিতে সংবাদ সম্মেলন।। বয়ঃসন্ধি কিশোরীদের সচেতনতায়” ফাতিহা’র চ্যাপ্টহার’ ফাউন্ডেশনের পথ চলা।।

সঙ্কটে রফতানি আয়ের প্রধান ক্ষেত্র তৈরি পোশাক খাত।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
  • আপডেট সময় : সোমবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
  • ২৬৪ বার পঠিত

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারিতে সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে রফতানি আয়ের প্রধান ক্ষেত্র তৈরি পোশাক খাত। মহামারির প্রথম ঢেউয়ের ধাক্কা সামলে উঠে দাড়াঁতে শুরু করলেও দ্বিতীয় ঢেউ সামলে উঠতে পারেনি এই খাত। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অব্যাহত লোকসানের কারণে তাদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। একইসঙ্গে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সহসাই ভালো পরিস্থিতির আশা দেখছেন না এ খাতের ব্যবসায়ীরা।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উন্নত অনেক দেশের মতো বাংলাদেশে করোনা টিকাদান কর্মসূচির সফলতা, ফের প্রণোদনার ব্যবস্থা করা ও সরকারের জরুরি পদক্ষেপ  গভীর খাত থেকে টেনে তুলতে পারে।

 দ্বিতীয় ধাক্কায় আমরা অনেক বেশি ইফেক্টেড হয়েছি। আমাদের অর্ডার কমে গেছে  

কারখানা খোলা-বন্ধ নিয়ে জটিলতা
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর দ্রুতই ভাইরাসটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ  জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর। প্রকোপ ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে প্রথম দফায় ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। সাধারণ ছুটি এপ্রিলে বাড়লে পোশাক মালিকদের দুইটি সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সিদ্ধান্তহীনতায় জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

অনেক কারখানাই সে সময় চালু ছিল। চাকরি বাঁচাতে অনেক শ্রমিক ঢাকায় ফিরতে থাকেন। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় সর্বত্র সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে রাখার সিদ্ধান্ত হয়। মে মাসে আবার সাধারণ ছুটি বাড়লেও এপ্রিলের শেষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে যায় বেশিরভাগ কারখানা।

jagonews24

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে টালমাটাল পোশাক খাত
দেশে সংক্রমণ শনাক্তের প্রথম মাস মার্চ থেকেই ও স্থগিত হতে থাকে। এপ্রিলের শুরুতে প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ স্থগিত হয়। জুনের শুরুতে পোশাক কারখানাগুলো সীমিত আকারে তাদের কার্যক্রম চালু করলে স্বস্তি আসে এ খাতে। তবে বৈশ্বিক করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আবার বাতিল হতে থাকে অর্ডার।

 অনেকে বলবেন, আমরা শুধু চাই আর চাই। কিন্তু অনেক সময় চাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না 

এ বিষয়ে ফতুল্লা অ্যাপারেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র পরিচালক ফজলে শামীম এহসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘দ্বিতীয় ধাক্কায় আমরা অনেক বেশি ইফেক্টেড হয়েছি। আমাদের অর্ডার কমে গেছে। করোনার প্রথম ধাক্কায় কিছু অর্ডার হোল্ড হয়েছিল, কিন্তু পরে ক্রেতারা সেগুলো পুনরায় দেয়। কিন্তু সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর পরিস্থিতি খারাপ হয়ে গেছে। গার্মেন্টস এমন একটা ব্যাপার, ফ্লোরে যদি কমপক্ষে ৯০ শতাংশ অর্ডার না থাকে, তাহলে লোকসানে চলতে হয়। আমাদের ফ্যাক্টরিগুলো সেপ্টেম্বরের শেষ থেকেই লসে চলছে।’

প্রভাব রফতানিতে
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত বছর  ৫৭৩ কোটি ডলার বা প্রায় ৪৮ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে পোশাক রফতানি কমে গেছে ৫৬০ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলারের, যা স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় ৪৭ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা।

ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) এক হাজার ৫৫৪ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ কম। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ দশমিক ১২ শতাংশ কম। চলতি বছরের প্রথমার্ধে তৈরি পোশাক রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ৬২১ কোটি ডলার।

jagonews24

৭ মাসে কাজ হারিয়েছেন সাড়ে তিন লক্ষাধিক শ্রমিক
মহামারিকালে এখন পর্যন্ত দেশের প্রায় সাড়ে ৩ লাখের বেশি সম্প্রতি সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।

এ বিষয়ে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম জাগো নিউজকে জানান, মার্চে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে তারা শ্রমিকদের বেকারত্বসহ পোশাক খাতের সার্বিক অবস্থা জানতে জরিপ শুরু করেন। দেশের প্রায় সাত শতাধিক কারখানার ওপর সাত মাস ধরে জরিপ শেষ হয় অক্টোবরে। এই সাত মাসে ৭ শতাংশ বা ২৩২টি কারখানা বন্ধ হয়েছে। এছাড়া লে অফ ঘোষিত হয়েছে ২ দশমিক ২ কারখানায়। ৩০ শতাংশ বন্ধ হওয়া কারখানা শ্রমিকদের বেতন ভাতা দিতে পারেনি।

এ বিষয়ে ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘২০১৯ সালে চালু ছিল এমন ৮৩টি ফ্যাক্টরি ২০২০ সালে ইউডি (ইউটিলাইজেশন ডিক্লারেশন) নেয়নি। মানে রফতানি করতে যে পারমিশনের দরকার, ৮৩টি ফ্যাক্টরি তা নেয়নি। এখন এই ফ্যাক্টরিগুলো কি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে, নাকি তারা সরাসরি রফতানি না করতে পেরে সাব-কন্ট্রাক্ট করছে, এটা বোঝার মতো কোনো উপায় নেই। তবে সরাসরি রফতানি থেকে ৮৩টি কারখানা ছিটকে পড়েছে, এটা আমরা বলতে পারি।’

ফের প্রণোদনা চান গার্মেন্টস মালিকরা
গত বছর পোশাক খাতের শ্রমিক-কর্মকর্তাদের ছয় মাসের বেতন ভাতা দিতে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণ দেয় সরকার। দুই বছরের কিস্তিতে সেই ঋণ পরিশোধে গার্মেন্টস মালিকদের সুযোগ দেয় সরকার। তবে গত বছরের নভেম্বরে ঋণ পরিশোধে আরও এক বছর সময় চেয়ে খোলা চিঠি দেন বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক।

jagonews24

চিঠিতে তিনি প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণের সুদ অন্তত ছয় মাসের জন্য স্থগিত অথবা প্রণোদনা পরিশোধের মেয়াদ অন্তত আরও এক বছর বাড়ানোর দাবি জানান। এর আগে গত বছরের আগস্টে ফের প্রণোদনা চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় বিজিএমইএ। চিঠি প্রাপ্তির কথা নিশ্চিত করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

এ বিষয়ে বিকেএমই পরিচালক ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘অনেক দিন তো হয়ে গেল, প্রায় ৫-৬ মাস টানা লসে চলতে গিয়ে আমাদের যা ছিল এবং প্রণোদনার টাকা আমরা যা পেয়েছি, সব শেষ।’

এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ফের চাওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেকে বলবেন, আমরা শুধু চাই আর চাই। কিন্তু অনেক সময় চাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। তবে এবার বিষয়টা সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আর্থিক সুবিধার বাইরে পলিসি সাপোর্ট সংক্রান্ত একটা নীতি চাই। ব্যবসায় সহায়ক একটা নীতি হোক। সরকার পোশাক খাত নিয়ে অনেক আন্তরিক। কিন্তু নিম্ন পর্যায়ের কর্মচারীদের অনিয়মে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। পোর্ট থেকে শুরু করে কাস্টমস সবক্ষেত্রে আমরা বাধার সম্মুখীন হই। এখন ব্যবসায় কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সবাই একসঙ্গে কাজ না করলে এই অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় নেই।’

এ জাতীয় আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২০ দৈনিক তৃণমূল সংবাদ
Theme Customized BY Theme Park BD