লকডাইনের খবরে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে তিন গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে রাজধানী ছাড়ছে মানুষ।
এইচ এম জুয়েল:-
দক্ষিণ অঞ্চলের নৌ যাত্রীরা লঞ্চে প্রবেশের শুরুতে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার ও মাস্ক পরার জন্য বারবার সচেতন করা হলেও ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি মানছেনা অনেকেই। ৬০ শতাংশ ভাড়া নিলেও অর্ধেক যাত্রী নেওয়ার বিধিনিষেধ মানছেনা বেশিরভাগ লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। তবে ঘাটে ও লঞ্চে মাইকিং করে স্বাস্থ্যবিধি মানতে সচেতন করা হচ্ছে। লালকুঠি ঘাট থেকে সকালে বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া গ্রিল লাইন কর্তৃপক্ষ জানায় ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর বিষয় আমাদের আগের ভাড়ার সঙ্গে ১০০ টাকা যোগ করেছি। আগে ৭০০ টাকা ভাড়া ছিল এখন ৮০০ টাকা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) তথ্যমতে, রোববার বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে সদরঘাট থেকে দূরপাল্লার ৮৫টি লঞ্চ ছেড়ে যায়।
এদিকে লঞ্চে জায়গা না পেয়ে পরিবহনের দিকে ঝুকছে মানুষ, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে তিন গুণ বেশি ভাড়া নিচ্ছেন পরিবহনশ্রমিকরা রোববার (০৪ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকায় বাসস্ট্যান্ড গুলোতে ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি স্ট্যান্ডে বাড়ি ফেরা মানুষের উপচে পড়া ভিড় যাত্রী এবং পরিবহনশ্রমিকরা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। নেই মনিটরিং ব্যবস্থা। ৫০ শতাংশ সিট ফাঁকা রাখার কথা বলা হলেও মানছেন না কাউন্টারের মাস্টাররা। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বাসের টিকিট কিনেছেন যাত্রিরা। তারা বলেন, বাড়ি যেতে হবে। উপায় নেই। পরিবহনশ্রমিকরা বলেছেন আপনার পাশের সিটে কেউ বসবে না। আসলে তা মিথ্যা। তিন গুণ ভাড়া নিলেও প্রত্যেক সিটে লোক নিয়েছেন তারা। লকডাউন ঘোষণার পরপরই বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে এ বিষয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে তিন গুণ বেশি ভাড়া নিচ্ছেন । পরিবহনশ্রমিকরা বলেন আমরা যাত্রীদের স্যানিটাইজ করিয়ে গাড়িতে তুলছি। শতভাগ যাত্রীর মাস্ক নিশ্চিত করেছি। বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমরা জোর করে নিচ্ছি না। বলে যার কাছ থেকে যা পাচ্ছি তা নিচ্ছি। কারণ কাল থেকে বাস চলবে না। এজন্য বেশি ভাড়া দিয়েই যাচ্ছেন যাত্রীরা। সাভার হাইওয়ে থানা পুলিশের পরিদর্শক সাজ্জাদ করিম তৃণমূল সংবাদকে বলেন সড়কে আমরা মনিটরিং বাড়িয়ে দিয়েছি। বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পাইনি।
এদিকে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে মাওয়া লঞ্চঘাটে যাত্রীদের গাদাগাদি করোনাভাইরাসের ঝুঁকি নিয়েই ঘরে ফিরছে শুরু করেছে দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গের মানুষ। আর তাই শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে ঘরমুখী যাত্রীদের ঢল দেখা গেছে। সরকার কর্তৃক দেশব্যাপী লকডাউনের ঘোষণা দেওয়ায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌ-রুটে যেন পারপারে প্রতিযোগিতায় লেগেছে হাজার হাজার মানুষ। দক্ষিণবঙ্গের ২১টি জেলার প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত বাংলাবাজারঘাট লঞ্চ ও স্পিডবোট ঘাটে গিয়ে দেখা যায় পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। তবে লঞ্চে জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়া বাড়ানো হলেও কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানছে না লঞ্চ কর্তৃপক্ষ ও যাত্রীরা। নেই কোনো সামাজিক দূরত্ব। বাংলাবাজার সি-বোট ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, জনপ্রতি ২০০ টাকা ভাড়া দিয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা নদী পাড়ি দিচ্ছেন অনেকে। বর্তমানে এই নৌরুটে ৮৭টি লঞ্চ ও ২০০ স্পিডবোট চলাচল করছে। ঢাকা থেকে খুলনা–বরিশাল গামী যাত্রীরা বলেন, কাল থেকে লকডাউন দিয়েছে সরকার। তাই বাড়ি যাচ্ছি, লঞ্চে আগের মতোই গাদাগাদি করেই ছুটছে মানুষ। এতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। বরিশালগামী যাত্রী হায়দার জানান, এক সপ্তাহ লকডাউন। এ সময় ঢাকায় থেকে কী করব। তাই বাবা-মা ও পরিবারের সঙ্গে সময় দিতেই এখন এত কষ্ট করে বাড়ি যাচ্ছি। করোনা নিয়ে এখন ভেবে কী হবে। মৃত্যু যেদিন আসবে, সেদিন হবে। বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটের ট্রাফিক ইনচার্জ আক্তার হোসেন তৃণমূল সংবাদকে বলেন, সকাল থেকে ঘরমুখী যাত্রীদের ভিড় বেশি। করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে তাদের মাইকিং করে নিরাপদ দূরত্বে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। লঞ্চগুলোকে ট্রিপ শেষে ওয়াশ করা হয়। এ ছাড়া সব যাত্রীকে মুখে মাস্ক বাধ্যতামূলক করে লঞ্চে ওঠানো হয়।
কালবৈশাখী তান্ডবে দেশবেপি ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে গাইবান্ধায় নারী শিশু সহ ৮ জন ফরিদপুরে মা-মেয়ে ২জন এবং ঈশ্বরদী একজন মোট ১১ জন মারা গেছে।
বৈরী আবহাওয়ার কারণে রোববার সন্ধ্যায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া, শিমুলিয়া বাংলাবাজার নৌ-পথে ছোট বড় সব ধরনের ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আরিচা কার্যালয়ের বিআইডব্লিউটিসির ডিজিএম মো. জিল্লুর রহমান তৃণমূল সংবাদকে বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-পথে সাময়িক ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল বৈরী আবহাওয়া ভালো হওয়ার পর, ফেরি ও লঞ্চ চলাচল শুরু করি। তবে ফেরিঘাটে যাত্রীদের খুব চাপ দেখা যায়।