—বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি
নিজস্ব প্রতিনিধি:- যুবক ও ডেসটিনির যে পরিমাণ সম্পদ আছে তা বিক্রি করলে গ্রাহকদের অন্তত ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
প্রতিযোগিতা আইনের বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির বিষয়ে রোববার এক কর্মশালায় তিনি একথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “বিতর্কিত এমএলএম কোম্পানি ডেসটিনি ও যুবকের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায় কিনা তা ভাবা হচ্ছে। কারণ এসব কোম্পানির সম্পদ বেড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ দুটির কোম্পানির সম্পদ বিক্রি করে ক্ষতিগ্রস্তদের ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব হবে।
“এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। আইনে সংশোধন প্রয়োজন হলে তা করা হবে।”
মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসার মাধ্যমে ডেসটিনি গ্রুপ দেশের প্রায় ৪৫ লাখ গ্রাহকের কাছ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে সেই সময়কার গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
গ্রাহক, পরিবেশক ও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সমবায় সমিতিতে বিনিয়োগ, গাছ লাগিয়ে ভবিষ্যতে তা বিক্রি করে মুনাফা দেওয়াসহ বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে টাকা সংগ্রহ করত ডেসটিনি।
এসব টাকা দিয়ে ডেসটিনির মালিকরা নিজেদের ও প্রতিষ্ঠানের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপনা, জমি, ভবন কিনেছে। ২০১২ সালে এই কোম্পানির মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। সেই থেকে ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন কারাগারে আছেন, প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমও বন্ধ।
একইভাবে যুবকও দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে সরকার প্রশাসক নিয়োগ করে। এ পর্যন্ত যুবকের গ্রাহকরাও টাকা পায়নি। আইনি জটিলতা কেটে গেলে গ্রাহকরা জমানো টাকা ফেরত পেতে পারে। সে ব্যাপারে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
ই-কমার্স প্রসঙ্গে টিপু মুনশি বলেন, আড়াই লাখ টাকার মোটরসাইকেল দেড় বা দুই লাখ টাকায় বেচাকেনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে কিভাবে একটা পণ্য বিক্রি হতে পারে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে কথা বলতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে হবে। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে মন্ত্রণালয় থেকে কেনাকাটায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে কথা উঠতে পারে যে, মন্ত্রণালয় মানুষকে লাভ থেকে বঞ্চিত করছে।
ই-কমার্স সাইটে অর্ডার দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী নিজেই
মন্ত্রী বলেন, আমি গত কোরবানির ঈদের আগের কোরবানির ঈদে একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করি। তাদের কাছ থেকে নিজের কুরবানির গরু কিনতে এক লাখ টাকা দিই। কিন্তু আমাকে যে গরুটি দেখিয়েছিল, আমি সেটি পাইনি। আমি নিজেই তখন অর্ডার করে প্রতারিত হয়েছিলাম। একটি জিনিস নতুন করে চালু করলে সেটা নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়, তার ভুক্তভোগী আমি নিজেই। প্রতিষ্ঠানটি আমার পরিচিত ছিল। যেহেতু আমাকে অন্য গরু দেবে বলেছে, তাই মামলা করিনি। পরে এক লাখ টাকায় আমাকে গরুর সঙ্গে একটি ছাগলও দিয়েছে। যদি আমি শুনতাম টাকাও নেই, গরুও নেই তাহলে মামলা করা যেত।
তিনি বলেন, আপনারা শুনে আরও অবাক হবেন ই-অরেঞ্জ তো নিবন্ধনও নেয়নি। প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসা করেছে কেবল ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে। এর বিরুদ্ধে বর্তমান আইনের ৪২০ ধারায় মামলা দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু তাতে কী লাভ হবে? কয়েকদিন পরে তারা জামিন নিয়ে চলে যাবে। তাই আইন পরিবর্তন করতে হবে।