1. admin@dainiktrinamoolsangbad.com : admin :
শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ১১:৩৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পাথরঘাটায় পরিত্যক্ত ভবনে লাইব্রেরী” প্রচন্ড তাপদাহে টিনশেডে শিশুদের ক্লাস! মঠবাড়িয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের “সভাপতি নাজমুল-সম্পাদক কামরুল! হিজলায় প্রতিবন্ধী ও অসহায় পরিবারের মাঝে এফ এ আর গ্রুপের গরু বিতরণ জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৩’ ভান্ডারিয়ায় কলেজ পর্যায় শ্রেষ্ঠ শ্রেণী শিক্ষক “নুরুজ্জামান হাওলাদার ঘূর্ণিঝড়ে জন্ম নিয়েছে শিশু” মা’ নাম রেখেছে মোখা! ভান্ডারিয়ায় শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোটের কমিটি গঠন, সভাপতি মনির-সম্পাদক পলাশ! পিরোজপুর জেলা জাতীয় যুব সংহতির”  হাফিজুর রহমান আহবায়ক ও আবুল কালাম সদস্য সচিব। মঠবাড়িয়ায় মানবসেবা সংগঠনের পক্ষ থেকে অসুস্থ ছাত্রীকে “আর্থিক সহায়তা। র‌্যাবের অভিযানে “মঠবাড়িয়া পুলিশের উপর হামলার ৫ আসামি গ্রেপ্তার। আত্ম কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ভান্ডারিয়ায় যুব মহিলাদের প্রশিক্ষণ।

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান

আন্তরজাকি ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
  • ২৫৮ বার পঠিত

নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মিয়ানমারের সোনাবাহিনী আবার দেশটির ক্ষমতা দখলে নিয়ে এক বছরের জরুরি অবস্থা জারি করেছে।

গ্রেফতার করেছে ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) প্রধান অং সান সু চি ও দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে।

জরুরি অবস্থা জারির সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশে ইন্টারনেট, টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং রেডিও-টেলিভিশন সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

সোমবার সকালে এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ‘দেশের ক্ষমতা কমান্ডার-ইন-চিফ (সেনাপ্রধান) মিন অং হ্লেইংয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

অভ্যুত্থানের খবরে কিছু সেনা সমর্থক রাস্তায় আনন্দ উল্লাস করলেও আপামর জনগণের মনে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। আতংকে অনেকে টাকা তুলতে এটিএম বুথের সামনে জড়ো হন।

অনেকে খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী কিনতে ভিড় করেন বিভিন্ন দোকানে। এদিকে অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে জনগণকে বিক্ষোভে নামার আহ্বান জানিয়েছেন সু চি। খবর বিবিসি, এএফপি ও রয়টার্সসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের।

গত বছরের নভেম্বরে সাধারণ নির্বাচনে অং সান সু চির দল এনএলডি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। তারপর থেকেই মূলত মিয়ানমারের বেসামরিক সরকার এবং প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনার শুরু।

প্রথম থেকেই সেনাবাহিনী নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ করে আসছিল। সোমবার জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দিয়ে সামরিক বাহিনী পরিচালিত টেলিভিশনে বলা হয়েছে, নির্বাচনে জালিয়াতির কারণেই ক্ষমতা দখল করেছে সেনাবাহিনী।

এনএলডি মুখপাত্র মিও নয়েন্ট জানান, ভোরে রাজধানী নেপিদোতে অভিযান চালিয়ে তাদের শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করা হয়। এর কয়েক ঘণ্টা পর সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে এক বছরের জন্য দেশে জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রদেশে সেনাসদস্যরা প্রাদেশিক সরকারের প্রধানদের বাসায় বাসায় গিয়ে তাদের গ্রেফতার করছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে সু চি ছাড়াও প্রেসিডেন্ট উয়িন মিন্ট এবং অন্য জ্যেষ্ঠ নেতারা আছেন।

নিজেও গ্রেফতার হতে পারেন- এমন ধারণা করছেন জানিয়ে নয়েন্ট বলেন, আমি আমাদের জনগণকে বলতে চাই, চটজলদি প্রতিক্রিয়া জানাবেন না এবং চাই তারা আইন অনুযায়ী কাজ করুক।

এনএলডির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সু চির নামে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশের জনগণের সামরিক অভ্যুত্থান মেনে নেওয়া উচিত নয় এবং এর বিরুদ্ধে অবশ্যই বিক্ষোভ করা উচিত।

সু চি বলেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী আবার জান্তা শাসন কায়েম করার চেষ্টা করছে। এটি মেনে না নেওয়ার জন্য আমি জনগণের কাছে অনুরোধ জানাই। সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামার আহ্বান জানাই।

সু চির নামে এ বিবৃতি দেওয়া হলেও সেখানে তার স্বাক্ষর ছিল না। তবে এনএলডির চেয়ারম্যান উইন হেইন এক বিবৃতিতে বলেন, আমার জীবনের দিব্যি দিয়ে বলছি এটা অং সান সু চির নির্ভরযোগ্য বিবৃতি, যা তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, নেপিদো ও ইয়াঙ্গুনের পাশাপাশি মিয়ানমারের প্রধান প্রধান শহরে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। বাসিন্দারা এর মধ্যেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন।

অনেকেই বাইরে বের হয়ে শুকনো খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে শুরু করেছেন। তবে বিভিন্ন দোকানে চাল এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিয়ে অনেকে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

ইয়াঙ্গুনের আঞ্চলিক পার্লামেন্ট এবং আঞ্চলিক সরকারি অফিসগুলোর দখল নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। বেসামরিক কর্মকর্তাদের এসব দপ্তরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

এদিকে মিয়ানমারে সব ধরনের আর্থিক কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির বিভিন্ন ব্যাংক। সকালে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি এবং ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার পরই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মিয়ানমার ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে বলেছে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ইন্টারনেটসেবা ব্যাহত হওয়ায় দেশটির সব ব্যাংক তাদের সব ধরনের আর্থিক কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সব ব্যাংকের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ রাখার বিষয়ে মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি নেওয়া হবে এবং কবে থেকে সব কার্যক্রম আবারও শুরু হবে সে বিষয়টি পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।

ভোটে ‘জালিয়াতির’ ঘটনায় এই পদক্ষেপ-মিয়ানমার সেনাবাহিনী : মিয়ানমারে গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ করে সেনাবাহিনী বলেছে, এ কারণেই সরকারের জ্যেষ্ঠ নেতাদের গ্রেফতার করে তারা জরুরি অবস্থা জারি করেছে।

সামরিক বাহিনী পরিচালিত মায়াবতী টেলিভিশনে সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিং অং হ্লাইংয়ের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে। বিবৃতিতে চারটি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে অন্যতম হলো- নতুন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা এবং নিয়মানুযায়ী ভোটার তালিকা তদন্ত ও পর্যালোচনা করা। এছাড়া কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে সামরিক সরকার যুদ্ধ চালিয়ে যাবে এবং মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে বেগবান করা হবে।

সামরিক বাহিনী বলছে, জরুরি অবস্থা শেষ হলে দেশটিতে নতুন করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং বিজয়ী দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। সেনা অভ্যুত্থানের কয়েক ঘণ্টা পর এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

ফের হুমকিতে গণতন্ত্র : ১৯৬২ সালে অভ্যুত্থানের পর থেকে প্রায় ৫০ বছর ধরে মিয়ানমারে সরাসরি সেনা শাসন চলেছে। সে সময় দীর্ঘ ১৫ বছর গৃহবন্দি করে রাখা হয় সু চিকে।

গৃহবন্দি থাকা অবস্থায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অহিংস লড়াইয়ের জন্য ১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান তিনি। এরপর তার দল এনএলডি জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে আসে। ২০১০ সালে মুক্তি পান সু চি।

২০১২ সালের উপনির্বাচনে ৪৫টি আসনের মধ্যে ৪৩টিতে জয়ী হয়ে সংসদে প্রধান বিরোধী দল হয় সু চির দল। এরপর ২০১৫ সালের নির্বাচনে এনএলডি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে।

সেই সরকারের মেয়াদ শেষে গত বছরের ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি বড় জয় পায়। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ৩২২টি আসনই যথেষ্ট, সেখানে এনএলডি পেয়েছে ৩৪৬টি আসন।

কিন্তু সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে।

দেশটির নির্বাচন কমিশন অনিয়মের অভিযোগ নাকচ করলেও উত্তেজনা বাড়তে থাকায় মিয়ানমারে ফের সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা করা হচ্ছিল।

এ জাতীয় আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২০ দৈনিক তৃণমূল সংবাদ
Theme Customized BY Theme Park BD