1. admin@dainiktrinamoolsangbad.com : admin :
বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৫:১৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
হিজলায় ১০৬ বছর পর থানার জমি উদ্ধার। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকারের আজকের বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল .. এ কে এম এ আউয়াল। সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করলেন নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী -মহিউদ্দিন মহারাজ !! আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর হতে যাচ্ছে সেতু কথা দিয়ে কথা রাখলেন — আবুল হাসানাত!! হিজলায় অবসরপ্রাপ্ত বিজেপি সদস্যের রহস্যময় মৃত্যু লাশ উদ্ধার ।। হিজলায় সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে ইউএনও’র মতবিনিময়! নলছিটিতে জমজমাট কোচিং বাণিজ্য! হিজলায় ধর্ষণ মামলা তুলে নিতে বাদী ও তার পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি হিজলায় কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তি ও পুরস্কার বিতরণ। ভারসম্যহীন নারীর নবজাতক শিশুটি”এখন ছোটমণি নিবাসে!

ভোজন রসিকদের জন্য! দিনে কতটুকু মাংস খাওয়া নিরাপদ?

এইচ এম জুয়েল
  • আপডেট সময় : বুধবার, ২১ জুলাই, ২০২১
  • ৩৫৬ বার পঠিত

             ভোজন রসিকদের জন্য!
     দিনে কতটুকু মাংস খাওয়া নিরাপদ?

এইচ এম জুয়েল:-ঈদ এলে মাংস তো খাওয়া হয়ই। বিশেষ করে কোরবানির ঈদে। কিন্তু অতিরিক্ত চর্বি ও ক্যালরি খেয়ে ফেলার ভয় তো আছেই। ওজন নিয়ন্ত্রণ, রক্তে শর্করা ও চর্বি নিয়ন্ত্রণ এবং হৃদরোগ প্রতিরোধের জন্য লাল মাংস এরিয়ে চলা ভালো।গরু বা খাসির মাংস দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার খুবই মজাদার হয়ে থাকে। আর এ কারণে অতিরিক্ত মাংস খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিশেষজ্ঞদের মতে, লাল মাংস স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। তবে সঠিক পরিমাণ অনুযায়ী খেলে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার(হু) তথ্য অনুযায়ী, প্রক্রিয়াজাত মাংস ও লাল মাংস আপনার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই মাংস পরিমাপ অনুযায়ী খাওয়া উচিত। মাংস প্রোটিনের একটি দুর্দান্ত উৎস, তা সবারই জানা। এ ছাড়াও অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান থাকে মাংসে। যা আমাদের দেহের বিকাশ ঘটাতে কাজ করে। ভেড়া, গরুর মাংস, খাসির মাংস অর্থাৎ লাল মাংস আয়রনের একটি উৎস। এটি রক্তাল্পতা প্রতিরোধ করে। সপ্তাহে একবার বা দুইবার লাল মাংস খাবারের তালিকায় রাখতেই পারেন। এতে শরীরের কোনো ক্ষতি হবে না। আসলে রেড মিট সম্পর্কে সতর্কবাণীর প্রায় পুরোটাই বয়স্কদের জন্য। যাদের বয়স ৩০-এর নিচে, রক্তে কোলেস্টেরল মাত্রা ঠিক আছে, মেদাধিক্য নেই এবং ওজনও স্বাভাবিক, তাদের জন্য লাল মাংসে অসুবিধা নেই। মাংসে থাকা উচ্চ প্রোটিন ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। যার ফলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে। গরু ও খাসির মাংসে আরও থাকে জিঙ্ক, ভিটামিন বি ১২, সেলেনিয়াম, ফসফরাস, নায়াসিন, ভিটামিন বি ৬, আয়রন এবং রিবোফ্লেভিন। জিঙ্ক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ফসফরাস দাঁত ও হাড়ের শক্তি বাড়ায়, আয়রন শরীরের পেশিগুলোতে অক্সিজেন প্রবাহে সহায়তা করেন এবং ভিটামিন বি১২ খাদ্য থেকে শক্তি যোগান দেয়।

দিনে কতটুকু মাংস খাওয়া নিরাপদ? গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন প্রায় ২১ গ্রাম লাল মাংস খান; তাদের তুলনায় যারা দিনে প্রায় ৭৬ গ্রাম লাল এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস খান, তাদের অন্ত্রের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) এর নির্দেশনা অনুযায়ী, যারা নিয়মিত ৯০ গ্রামের বেশি লাল বা প্রক্রিয়াজাত মাংস খায়; তাদের কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশেই বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, দৈনিক গরুর মাংস খাওয়ার নিরাপদ মাত্রা হলো, ৩ আউন্স বা ৮৫ গ্রাম। আনুমানিক একটা কম্পিউটারের মাউস পরিমাণ মাংস খেতে পারবেন তবে একজন পূর্ণবয়স্ক পুরুষের দিনে ৫৫ গ্রাম এবং পূর্ণবয়স্ক নারীর দৈনিক ৪৫ গ্রাম । সেইসঙ্গে চর্বি ছাড়া মাংস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। লাল মাংস আমিষের সবচেয়ে উত্তম উৎস। যেমন- গরুর শরীরের ২টি অংশ আছে যাতে পাবেন চর্বি ছাড়া মাংস এবং এই অংশগুলোতে চর্বির পরিমাণ চামড়া ছড়ানো মুরগির থানের মাংসের চেয়েও কম। এই ২টি অংশ হলো রাউন্ড এবং সিরলইন। এই অংশগুলোর মাংসে চর্বির পরিমাণ থাকে সর্বনিম্ন ৪.২ গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ ৮.২ গ্রাম। যেখানে মুরগির থানের মাংসে অভ্যন্তরীণ চর্বির পরিমাণ থাকে ৯.২ গ্রাম। তাই আপনি গরু, খাসি বা মুরগি যে মাংসই খান না কেন তার থেকে দৃশ্যমান চর্বি আলাদা করে সলিড মাংস খেতে হবে। তাহলে সুস্থ থাকবেন। প্রতিদিন মাংস খাওযার পরামর্শ কখনোই দেন না বিশেষজ্ঞরা। পুষ্টিবিদদের মতে, সপ্তাহে একবার বা দুইবার লাল মাংস রাখুন। গরুর মাংসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। মগজ ও কলিজায়, প্রোটিন থাকলেও সেটার পরিমান কম, বরং এর বেশিরভাগ জুড়ে রয়েছে কোলেস্টেরল।

মাংস উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করা হলে ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাট তৈরি করে মাংসে থাকা ভিটামিন ‘বি’ নষ্ট হয়।সাধারণত ৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ঢেকে ধীরে ধীরে মাংস রান্না করা বা প্রেসার কুকারে রান্না করা ভালো।পুরাপুরি সিদ্ধ হলে পুষ্টিমান বজায় থাকে। রান্না করা মাংস বারবার গরম করলে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। তাই একবারে বেশি রান্না না করে একবেলা বা বড়জোর দুই বেলা খাওয়ার মতো মাংস রান্না করুন।

প্রতিদিনের প্রোটিনের চাহিদা নির্ভর করে আপনার ওজনের ওপর। ধরাযাক একজন মানুষের আদর্শ ওজন ৫০ কেজি। তিনি যদি সুস্থ থাকেন তাহলে প্রতিদিন তার ৫০ গ্রামের মতো প্রোটিন প্রয়োজন, তবে যদি তার কিডনি জটিলতা থাকে তাহলে তিনি প্রতিদিন ২৫ গ্রাম প্রোটিন খাবেন। মানে স্বাভাবিকের চেয়ে অর্ধেক। আবার মেয়েদের মাসিক চলাকালীন কিংবা গর্ভবতী অবস্থায় এই পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যাবে। অর্থাৎ আদর্শ ওজন ৫০ কেজি হলে তারা ১০০ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন খেতে পারবেন। যাদের ওজন আদর্শ ওজনের চাইতে কম তাদেরও বেশি বেশি প্রোটিন খাওয়া প্রয়োজন। তবে কারোই প্রতিদিন ৭০ গ্রামের বেশি এবং সপ্তাহে ৫০০ গ্রামের বেশি প্রোটিন খাওয়া উচিত না বলে ব্রিটেনের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ জানিয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে ২৬ গ্রাম প্রোটিন এবং ২ গ্রাম ফ্যাট থাকে। তার মানে প্রতিদিনের এই প্রোটিনের চাহিদা পূরণে কি আপনি ২৭০ গ্রাম মাংস খাবেন? একদমই না। কেননা দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা একটি খাবার নয় বরং বিভিন্ন খাবার ও পানীয় দিয়ে আমরা পূরণ করে

আমরা যে পদ্ধতিতে মাংস রান্না করি, মানে তেল-মসলাসহকারে ঐতিহ্যবাহী বাঙালি বা ভারতীয় মাংসের ভুনা বা ঝাল করি, তাতে ক্যালরির পরিমাণ একটু বেশিই। এ রকম ছোট এক বাটি মাংসের ভুনা করিতে (যাতে ১০০ গ্রাম বিফ বা গরুর মাংস থাকে) ক্যালরির পরিমাণ ৪৩৫, আর এর ৬৩ শতাংশই হলো চর্বি, ২৫ শতাংশ আমিষ। ১০০ গ্রাম গরুর মাংস যদি কাবাব করে খান, যাতে কিনা চর্বি সব ফেলে দেওয়া হয়েছে, তাতে ক্যালরির পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬০, চর্বি ৭ শতাংশ এবং আমিষ ৯ দশমিক ৭ গ্রাম। এক সার্ভিং শামি কাবাবে আপনি পাবেন ৬৫ ক্যালরি, ৫৮ শতাংশ আমিষ, ৩৩ শতাংশ ফ্যাট। ১০০ গ্রাম পরিমাণ বিফ স্টেকে ১৫০ ক্যালরি, এতে ফ্যাট আছে ৪৪ শতাংশ আর আমিষ আছে ৫৬ শতাংশ। গরুর মাংসের তুলনায় খাসির মাংসে চর্বি বেশি। ১০০ গ্রাম খাসির মাংস ভুনা বা রান্না করা হলে তাতে ৪৯১ ক্যালরি খাওয়া হবে। তার মানে, মাংস তো আপনি খাবেন, কিন্তু পদ্ধতিগত পরিবর্তন আনুন খাবারে। * মাংস যতটা সম্ভব পাতলা করে কাটুন। পাতলা করে কাটা স্টেকে চর্বির পরিমাণ ১০ শতাংশের নিচে নেমে আসে। দৃশ্যমান সাদা চর্বির পুরোটাই চেঁছে ফেলে দিন।* রান্নার সময় তেল-ঘি-মাখন যত কম ব্যবহার করা যায় তত ভালো। বরং সিরকা বা লেবুর রসে মেরিনেট করে, গ্রিল, কাবাব বা বেক করে রান্না করা ভালো। কাবাব ডুবো তেলে না ভেজে সামান্য তেল ব্রাশ করে ভেজে নিলে আরও ভালো। * সবজি বা সালাদসহযোগে মাংস খান। যেমন বিফ সালাদ, বিফ ভেজিটেবল, বিফ শোয়ার্মা জাতীয় খাবারে মাংসের পরিমাণ কম খাওয়া হবে, তার জায়গা পূরণ করবে সবজি বা সালাদ।* গরু বা খাসির একেক অংশে চর্বির পরিমাণ একক রকম। যেমন সবচেয়ে বেশি চর্বি আছে গরুর মগজে, দাপনা ও পাঁজরের মাংসে। সলিড অংশে চর্বি কম।
*
* ক্যালরি মেপে খেতে হলে রসনাকে সংযত করতেই হবে।  এক বেলা মাংস খেলে অন্য বেলা সবজি, মাছ খাওয়া যায় কিনা দেখুন।গরু, মহিষ, ছাগল ও খাসির মাংসে থাকে উচ্চমাত্রার প্রোটিন ও ফ্যাট। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে গরুর মাংস খেলে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও কোলেস্টরেলের মাত্রা বেড়ে যায়, বিশেষ করে যারা আগে থেকেই এসব রোগে ভুগছেন তাদের জন্য ঝুঁকি আরও বেশি।তাই হাঁটাহাঁটিও অনেক কাজে দেয়। দ্রুত হেঁটে ১৩ মিনিটে বা এর কম সময়ে এক মাইল দূরত্ব পার করলে মাইলপ্রতি ক্যালরি পোড়ানো হয় বেশি।সাধারণ নিয়ম হলো ১৮০ পাউন্ড (৮০ কেজি) ওজনের একজন ব্যক্তি প্রতি মাইল হেঁটে ১০০ ক্যালরি পোড়াবেন।

সমস্যা এড়াতে সচেতন হোন আগেই। মাংস অবশ্যই খাবেন, সেই সঙ্গে সালাদ ও শাক-সবজির মেন্যু রাখুন। তার পরও সমস্যা হলে জেনে নিন কিছু সমাধান। এ ধরনের শারীরিক সমস্যার সমাধান ওষুধ নয়। ঘয়োয়া সমাধানই নিরাপদ।
পেট ফাঁপা বা গ্যাসট্রিক পেটে গ্যাস থেকে মুক্তি পাওয়ার সহজ ঘরোয়া সমাধান হলো আদা খাওয়া। প্রতিবেলা মাংস খাওয়ার পর এক টুকরা আদা মুখে নিয়ে চিবিয়ে খান। পেটে গ্যাস জমবে না। কাঁচা আদা চিবিয়ে খেতে না পারলে আদার চা পান করুন। বড় এক টুকরা আদা ছেঁচে পানিতে ফুটিয়ে নিন। বেশকিছুক্ষণ জ্বাল হলে নামিয়ে নিন। কুসুম গরম থাকতে পান করুন। দিনে দুই বেলা পান করলে উপকার পাবেন। গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা হলেই ওষুধ খাবেন না। সহনীয় গরম পানিতে আধা কাপ লেবুর রস মিশিয়ে খান। কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যথা কমে যাবে। খাবারের ফাঁকে ফাঁকে পানি পানের অভ্যাস বাদ দিন। এতে খাবার ভালো হজম হয় না। আর গ্যাসে পেট ফেঁপে যায়। অস্থির লাগে। খাবারের আধা ঘণ্টা পরে পানি পান করুন। খুব প্রয়োজন হলে খাবারের মাঝে একঢোক পানি খেতে পারেন। পেট ফাঁপা সমস্যায় কাঁচা রসুন উপকারী। রসুন মলাশয়ে জীবাণু বৃদ্ধিকে বাধা দেয়। কয়েক কোয়া কাঁচা রসুন চিবিয়ে খান। পেট ফাঁপা কমে যাবে। বদহজম বদহজমের জন্য ১ কাপ পানিতে ১ টেবিল চামচ সাদা ভিনেগার ও ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন। উপকার পাবেন।

গার্লিক বিফ: যারা গরুর মাংস ঝাল করে খেতে পছন্দ করেন। রান্নার উপকরণ : গরুর মাংস ১ কেজি, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, হলুদ ও মরিচ গুঁড়া ১ কাপ, আদা ও রসুন বাটা আধা চা চামচ, রসুনের কোয়া ৪/৫টি, ধনে ও জিরা গুঁড়া ১ চা চামচ, টেস্টিং সল্ট সামান্য, তেল আধা কাপ, মাংসের মসলা আধা চা চামচ, টমেটো সস আধা কাপ, টক দই ১ কাপ, গরম মসলা গুঁড়া আধা চা চামচ, লবণ স্বাদ মতো।

এ জাতীয় আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২০ দৈনিক তৃণমূল সংবাদ
Theme Customized BY Theme Park BD