তৃণমূল ডেক্সঃ ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত নলিনী শ্রীহরনসহ ৬ আসামিকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (১১ই নভেম্বর ০২২) ভারতের সুপ্রিম কোর্ট আদেশে জানিয়েছেন- তামিলনাড়ুর সরকার এই আসামিদের মুক্তির জন্য রাজ্যপালের কাছে সুপারিশ করেছিল।
মুক্তিপ্রাপ্তরা হলেন- নলিনী শ্রীহরন, রবিচন্দ্রন, সান্থান, মুরুগান, এজি পেরারিভালান ও রবার্ট পায়াস। তাদের মধ্যে গত ১৮ মে এজি পেরারিভালানকে সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের আওতায় বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে মুক্তি দেন সুপ্রিম কোর্ট, যিনি ৩০ বছরেরও বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন।এছাড়া এই ছয় আসামির মধ্যে নলিনী শ্রীহরন এবং রবিচন্দ্রন গত বছর তামিলনাড়ু রাজ্য সরকারের কাছে প্যারোলে মুক্তির আবেদন জানিয়েছিলেন। আবেদনের পর তামিলনাড়ু সাসপেনশন অব সেন্টেন্স রুলস-১৯৮২-এর আওতায় রাজ্য সরকারের অনুমোদনে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর থেকে প্যারোলে মুক্ত রয়েছেন তারা।
ভারতের শীর্ষ আদালতের বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বি ভি নাগারথনারের বেঞ্চ আদেশে বলেছেন, মামলার অন্যতম দোষী এজি পেরারিভালানের মতো শীর্ষ আদালতের রায় অন্য আসামিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তে প্রতিক্রিয়ায়, কংগ্রেসের সম্পাদক জয়রাম রমেশ টুইট করেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর অবশিষ্ট খুনিদের মুক্ত করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য এবং সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। কংগ্রেস এর তীব্র নিন্দা জানায়।
**ঘটনার বিবরণ ** ১৯৯১-এর ২১ মে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরমবদুরে একটি নির্বাচনী জনসভায় আত্মঘাতী এক নারী মালার ভিতর বোমা রেখে সেই মালা প্রধানমন্ত্রীর গলায় পরিধান করে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে হত্যা করে। পরে জানা যায়, শ্রীলঙ্কার বিদ্রোহী তামিল গোষ্ঠী এলটিটিই-এর ধানু নামে এক নারী আত্মঘাতী জঙ্গি নিজেকে বোমার সঙ্গে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। ঘটনায় সাত জনকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয় আদালত।
** পরে আসমিগণ প্রাণভিক্ষা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেন । সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে দেরি হওয়ায় ২০১৪ সালে মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
উল্লেখ্য,** ভারতের ষষ্ঠ ও কনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন রাজীব গান্ধী। ১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গান্ধী হত্যার পর মাত্র ৪০ বছর বয়সে প্রধানমন্ত্রী হন রাজীব। ১৯৯১ সালে দক্ষিণ ভারতে এক নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে গিয়ে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত হন রাজীব গান্ধী। এলটিটির এক নারী গেরিলা এই আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায়। ঘটনাস্থলেই রাজীব মারা যান। এর আগে ১৯৮৪ সালের অক্টোবরে নিজের নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে হত্যার শিকার হন সেই সময়কার ভারতের নেত্রী ইন্দিরা গান্ধী।