ভান্ডারিয়া প্রতিনিধি: পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেনের অভাবে এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেনের সিলিন্ডার থাকা সত্বেও শনিবার (২৩ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে চারটার দিকে অক্সিজেনের অভাবে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনাটি বর্ণনা করে কান্না জড়িত কন্ঠে শিশুটির মা হেলেনা বেগম জানান, এই হসপিটালে অক্সিজেন অভাবে আমার চোখের সামনে ওর বাবার কোলে আমার এই মেয়েটি মারা যায়। এই পাষণ্ড নার্স ও ডাক্তারদের অবহেলার কারণে আজ আমার বাচ্চাটা মারা গেল এর জন্য প্রশাসনের কাছে বিচারের দাবী জানাই। আর যেন অক্সিজেনের অভাবে কোন মায়ের বুক খালি না হয়।
মারা যাওযা নবজাতকের বাবা উপজেলার ৭নং গৌরীপুর ইউনিয়নের উত্তর পৌকখালী গ্রামের বাসিন্দা রিকশা চালক সাবু হাওলাদার। তিনি জানান, গত শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ভান্ডারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার স্ত্রী হেলেনা বেগম কন্যা সন্তান জন্ম দেন। নরমালে সন্তান জন্ম দেয়ার পর নবজাতকের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। অক্সিজেন লাগালে নবজাতক সুস্থ্য হয়। এর পরে কর্তব্যরত নার্সের পরামর্শে ওই দিন বিকালে নবজাতকে শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ সৌরেন্দ্রনাথের কাছে নিয়ে যাই। ডাঃ সৌরেন্দ্রনাথ চিকিৎসা শেষে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেনে রাখার পরামর্শ দেয়। আমরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসলে সেখানে কর্তব্যরত নার্সরা জানান অক্সিজেন নাই। আমার হাতের উপর আমার মেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। আমি তাদের বারবার হাতে পায়ে ধরে অনুরোধ করেছি আমাকে একটু অক্সিজেনটা ম্যানেজ করে দেন। কিন্তু তারা আমার কোন কথা শোনেনি। উল্টো আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে।
শিশুর খালা রোজি বেগম জানান, শিশুটিকে ডাঃ সৌরেন্দ্রনাথ কাছে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি চিকিৎসা দিয়ে সরকারি হাসপাতালে অক্সিজেন দিতে বলে। আমরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসলে সেখান থেকে চারতলায় পাঠালে সিষ্টাররা জানান অক্সিজেন নাই। তখনও বাচ্চাটি সুস্থ্য ছিল, এসময় মায়ের দুধও পান করে। চোখের সামনেই অক্সিজেনের অভাবে শিশুটি আস্তে আস্তে নিস্তেজ হতে থাকে। তারাতারি জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে ডাক্তার যখন অক্সিজেন লাগায়, ততক্ষণে শিশুটি বেচেঁ নাই।
ভান্ডারিয়া পরিবার করিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কামাল হোসেন মুফতি জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেনে সংকট নেই। জন্মের পর থেকে শিশুর অবস্থা তেমন ভাল ছিল না। কি কারনে বলা হয়েছে অক্সিজেন নাই বিষয়টি আমি গুরুত্ব সহকারে দেখতেছি। কর্মরতদের সাথে কথা বলে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।