নির্বাচনে জিতে ভোটারের কিশোরী প্রেমিককে সালিশির বৈঠকে বিয়ে করলো “চেয়ারম্যান”
এইচ এম জুয়েল :-সেই বিখ্যাত গানের কথা মনে পড়ে গেল। 40 গেল 50 গেল 60 বছরে তার যৌবন এলো, চুল পাকিলে লোকে হয় না বুড়ো। সেই কথাটি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা রলকনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার (৬০) প্রমাণ করলো।
তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে নৌকা মার্কা নিয়ে ২১ জুন সোমবার ওই ইউনিয়নের দ্বিতীয়বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
আর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার চার দিন পর ২৫ জুন শুক্রবার প্রেম সংক্রান্ত ঝামেলা মেটাতে সালিশি করতে গিয়ে তার ইউনিয়নের এক ভোটারের প্রেমিক কিশোরীকে পছন্দ করেন। আর ওই দিনই তিনি ১৬ বছরের কিশোরীকে বিয়ে করেন।
চেয়ারম্যান ৬০ বছর বয়সে ১৬ বছর বয়সের এক কিশোরীকে বিয়ের ঘটনাটি মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। টক অব দ্যা উপজেলায় পরিণত হয়। আলোচনার খোরাকে পরিণত হন তিনি।
এটি চেয়ারম্যানের দ্বিতীয় বিয়ে। দুই সন্তানের জনক চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারের বড় ছেলে বিয়ে করেছেন স্থানীয় বিএনপির সাবেক এমপি সহিদুল আলম তালুকদারের এক শ্যালিকাকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কনকদিয়া ইউনিয়নের নারায়ণপাশা গ্রামের রমজান (২৫) নামের এক যুবকের সাথে একই ইউনিয়নের চুনারপুল এলাকার নবম শ্রেণির ছাত্রী নছিমনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এ সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি নছিমনের বাবা নজরুল ইসলাম। তিনি এবিষয়টি কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে জানান
চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার শুক্রবার ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ বৈঠক ডাকেন। ওই বৈঠকে রমজান ও নছিমনসহ দুই পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সালিস বৈঠকে মেয়ে দেখে পছন্দ হয়ে যাওয়ায় তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। মেয়ের বাবা এ বিয়েতে সম্মতি প্রকাশ করলে ওই দিন বাদজুমা চেয়ারম্যানের আয়লা বাজারস্থ বাসায় কাজী ডেকে এনে ৫ লাখ টাকা কাবিনে নছিমনকে বিয়ে করেন।
নছিমন কনকদিয়া বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা জানান, ওই কিশোরীর বয়স ১৫-১৬ বছর হবে।
এ ব্যাপারে চেয়ারমান শাহিন হাওলাদারের গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মেয়েটিকে দেখে আমার খুব পছন্দ হওয়ায় তাকে বিয়ে করেছি। এ ছাড়া এখন আমার বিয়ে প্রয়োজন ছিল।
কনের বয়স কম, তিনি বাল্য বিয়ে করেছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে চেয়ারম্যান বলেন, আপনাদের নবাগত ভাবির জন্ম তারিখ ২১ এপ্রিল ২০০৩। তিনি নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন। তিন বছর হয় পড়াশুনা বাদ দিয়েছেন। বিয়ের বিষয়টি নিয়ে তিনি লজ্জিত নন বরং আনন্দিত।
এ বিয়ের সময় চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারের প্রথম স্ত্রী দুই সন্তানের জননী পটুয়াখালী অবস্থান করছিলেন বলে জানা গেছে।
এদিকে ঐ মেয়ের প্রেমিক রমজান আক্ষেপ করে সাংবাদিকদের কাছে বলেন ভোট দিয়ে আমরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছি কিন্তু আমাদের প্রতি এতটা অবিচার করবে কখনোই ভাবিনি। এই বয়সে চেয়ারম্যানের স্ত্রী সন্তান থাকার পরেও আমার পোষা পাখিটা শিকার করল আল্লাহ তার বিচার করবে।