এইচ এম জুয়েল:- পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার নদমুল্লায় ইউনিয়নের হেতালিয়া গ্রামের মৃত খবির উদ্দিন হাওলাদারের পুত্র হাফেজ রাজাকার আমির হোসেনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ মামলা থাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ পালিয়ে থাকেন গত বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) পলাতক অবস্থায় মারা গেলে একই দিন নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
আমির হোসেন ও তার ভাইসহ কিছু লোক নিয়ে নিয়ে একাত্তরের যুদ্ধের সময় এলাকায় ব্যাপক লুটতরাজ অগ্নিসংযোগ ধর্ষণ ও হত্যাযজ্ঞ শুরু করেন তার বিরুদ্ধে ২৮৬টি ঘরে অগ্নিসংযোগ অর্ধশতাধিক লোককে হত্যা ও ধর্ষণ সহ একাধিক মামলার অভিযোগ এনে সাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে চার্জশিট দাখিল করেন আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা।
কে এই আমির পাকিস্তান আর্মিতে সৈনিক পদে কর্মরত ছিলেন (ক্যাম্পে ইমামতি করাতেন) ১৯৭১ স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হলে ছুটি নিয়ে নিজ গ্রামে চলে আসেন। যুদ্ধ শুরু হলে মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনের নামে এলাকায় ব্যাপক চাঁদাবাজি শুরু করেন। একপর্যায়ে তার বাড়ির কাছাকাছি হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় ব্যাপক লুটতরাজ শুরু করেন। ওই কাজে কেউ বাধা সৃষ্টি করলে পাকিস্তান আর্মি দিয়ে তাদের উপর লোমহর্ষক নির্মম অত্যাচার শুরু করেন। একপর্যায়ে ভান্ডারিয়া উপজেলায় প্রথম সারির রাজাকারের ভূমিকা পালন করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রূপালী ব্যাংকে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি নিয়ে অবসরে যান। এদিকে ২০০৯ সালের দিকে আওয়ামী লীগের সরকার গঠন করলে রাজাকার আমির হোসেন নিজে গা-ঢাকা দেয়। তার বসত ঘরটি একাত্তরের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি রা ধুলিস্যাৎ করে দিলে শন্ন ভিটা পড়ে রয়।
এদিকে ২০১৫ সালে রাজাকার আমির হোসেন বাহিনীর কর্তিক একাত্তরের ক্ষতিগ্রস্ত – নির্যাতিত পরিবার ও হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে শ্রী বিজয় বালা বাদী হয়ে পিরোজপুর জজ কোর্টে আমির হোসেনকে এক নম্বর আসামি উল্লেখ করে ৬ জনের নামে একটি যুদ্ধ অপরাধী (১৩১/১৫) নং মামলা দিলে বিজ্ঞ আদালত অত্র মামলা আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তর করেন। ২০১৮ সালের দিকে উক্ত মামলায় ৫ জন গ্রেপ্তার হন এবং আমিরসহ বাকি ৩ জন পলাতক থাকেন। হাজতে বসে আমিরের বড় ভাই রাজাকার ফজলুল হক ও আযাহা আজু মুন্সি মারা যান। পলাতক অবস্থায় রাজাকার সিদ্দিক মুন্সি মারা যান। রাজাকার আশরাফ ও মন্নাফ জেলহাজতে। মহারাজ জামিনে আছেন। সর্বশেষ আমির হোসেন পলাতক অবস্থায় মারা গেলে এলাকাবাসী সহ উক্ত মামলার বাদী ও সাক্ষীগণ খুশি হলেও তারা আশা করছিলেন তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারা হলে তারা সহ এলাকাবাসী বেশি খুশি হত।