দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজসহ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৩ লাখ ২০ হাজার আসন রয়েছে। আর এবার অটোপাস করিয়ে দেয়া হয়েছে ১৩ লাখ ৬৫ হাজার জনকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আসন সংখ্যা ১৩ লাখের বেশি হলেও শিক্ষার্থীরা মূলত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতে চাইবে। এ ক্ষেত্রে আসন সংখ্যা খুবই কম। ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা ৬০ হাজারে মতো এবং সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ৩ হাজারের কিছু বেশি। সে হিসাবে এই ৬৩ হাজার আসনেই মূল লড়াই হবে।
ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। আর এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অটোপাস পাওয়া শিক্ষার্থীরা। গত বছর যারা বিধানমতো পরীক্ষা দিয়ে এইচএসসি পাস করেছে তারাও এবার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। ইতিমধ্যে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ছয়টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং তিনটি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করবে।
এইচএসসি পাস কয়েক জন শিক্ষার্থী এই প্রতিবেদকে জানান, সব শিক্ষার্থীই পছন্দের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে চায়। সে হিসাবে প্রথম পছন্দ বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের মেডিক্যাল কলেজ ও বুয়েট। আবার যারা একটু ভালো ফল করেছে তারা চায় পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়।
৪৬ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবে। তবে পছন্দের তালিকার শীর্ষে থাকা বুয়েট, ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এই গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে না। ফলে এই পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি হতে চাইবে তাদের সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েই পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। চট্টগ্রামের কোনো শিক্ষার্থী বুয়েট কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাইলে তাকে ঢাকায় এসে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাইলে রাজশাহীতে গিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশ না নেওয়াকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, খোঁড়া অজুহাত। রাষ্ট্রপতি ও শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধও রাখেনি এসব বিশ্ববিদ্যালয়। তথ্য অনুযায়ী, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ হাজার আসনের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই ভর্তি করা হবে ৬ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন ৫ হাজার। আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩ হাজার।
গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশ নেওয়া ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ভর্তির নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে। নীতিমালা অনুযায়ী, ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক আবেদনে কোনো ফি নেওয়া হবে না। পরে যাচাইয়ের মাধ্যমে দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচিতরা ৫০০ টাকা আবেদন ফি জমা দিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা ২৩ হাজার ১০৪টি। এখানে ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীর বিজ্ঞান শাখার জন্য ন্যূনতম জিপিএ ৭, বাণিজ্য শাখার জন্য ন্যূনতম জিপিএ ৬.৫ এবং মানবিক শাখার জন্য ন্যূনতম জিপিএ ৬ থাকতে হবে। শুধু এ বছরের জন্যই গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯ ও ২০২০ সালে এইচএসসি পাশকৃত শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। পরবর্তী বছর থেকে গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ববর্তী বছরের পাশকৃত শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন না।
এছাড়া দেশের তিনটি বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় আলাদা গুচ্ছ পরীক্ষা নেবে। আর ছয়টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতির নীতিমালা নিয়ে প্রথম বৈঠক আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শহীদুর রশীদ ভুইয়া।